যে পারে পারুক

প্রতিনিধি | সম্পাদকীয়

শনিবার ৭ ডিসেম্বর ২০১৯|১২:২০:৩৫ মি.


সম্পাদক

মানুষ বোধসম্পন্ন অবয়ব। যাতে মানবতা ঠাঁই পায়। ঠাঁই পায় অন্য মানুষও। যার ফলে সম্পর্কে গড়ে ওঠে মানুষে মানুষে। বলে উঠি মানুষ মানুষের জন্য। তাইতো মানুষ হাত বাড়িয়ে ছোঁয় না শুধু মন বাড়িয়ে ছোঁয়। মনের স্পর্শই হয় মানবিক। পৃথিবী নামক গ্রহে মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষের বড় প্রয়োজন। আকাল চলছে মানুষের। সময় ও সম্পদের শুধু নয়, চলছে বোধের সংকট। সম্প্রীতির পৃথিবী চলছে পেছন পানে।

হাহাকার সর্বত্র বাষ্পায়িত হচ্ছে। বাষ্পাকুল হয়ে পড়ছে চোখ। যারফলে অনেক কিছুই দেখছে না তারা। দেখছে না নীতি-নৈতিকতার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া। দেখছে না, সকালে শিশুকে জাগায় না ভোরের পাখি। দেখছে না বইয়ের পাতায় কোন মানুষের ইতিহাস। আছে শুধু কাজের গল্প। তাইতো সমাজের জীর্ণ-শীর্ণ হাতগুলো উঠে আসে ভিক্ষার হাত হয়ে। উঠে আসে অসহায় জলছবি হয়ে। আমরা নির্বিকার পথ চলি সময়ের ¯্রােতে। তাকাই না কোনদিকে। উন্নাসিক পথ চলায় সামাজিক প্রলয় কী তাতে বন্ধ হয়ে যায়? হয় না। প্রলয় চলছে, ক্ষয়ে যাচ্ছে সামাজিক বন্ধন।

মাঝে মাঝে দু’ একটি বোধসম্পন্ন মানুষ দাঁড়িয়ে যায়। পথপাশে চিৎ হয়ে থাকা হাতগুলোর বর্ণগন্ধ শুঁকে নিতে। তারা দেখে, অবাক হয়, এতো ভিক্ষার হাত নয়। এ যে সমাজের উদাসীনতার অভিশাপ দাঁড়িয়ে পড়েছে পথে। একসময় আপনার আমার পথও আগলে দাঁড়াবে এই বঞ্চনা। তখন থেমে কী লাভ? তার আগেই কেউ না কেউ দাঁড়াচ্ছে। শুনছে জগতের উদাসীনতার বোঝা কী করে ভারী হচ্ছে। ভারী হচ্ছে সমাজের অকল্যাণ। ভরে উঠছে বৃদ্ধাশ্রম।

সমাজের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। বাড়ছে না কল্যাণের পৃথিবী। ঝরে পড়ছে বড় হয়ে ওঠা বোধসম্পন্ন মানুষ। ইঙ্গিত ভালো নয়। সমাজকে সুস্থতায় আনতে হবে।আনতে হবে বাঙালির শ্বাশত ঐতিহ্যকে। যেখানে শিক্ষা, ধর্ম, সংস্কৃতি পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে হাঁটবে। তৈরি হবে মানবিক বোধসম্পন্ন মানুষ। তৈরি হবে অপার সম্ভাবনার সমাজ। যেখানে প্রতিবেশী হবে সকলেই, আর আস্থার শিখরে থাকবে পরিবার, সন্তানরা হবে বৃদ্ধ সন্তানদের আশ্রয়। কথাটি বলতে হলো, কারণ সমাজের বন্ধনের সুতাটি মনে হয় কোথায় যেন কেটে গেছে। জীর্ণ মানুষগুলো উচ্চকণ্ঠে করছে না কোন অনুযোগ। কিন্তু তারপরও কিছু বোধসম্পন্ন মানুষ হাত বাড়াচ্ছে। সমাজটা এভাবেই এগুচ্ছে শ্লথ পায়ে। এ গতি বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে মাকুর সঞ্চালন।

সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়েই বাড়বে মননশীল মানুষের সংখ্যা। সমাজে বাড়বে সহমর্মী, বাড়বে সহকর্মী। তাহলেই পরিবর্তন হবে ইতিবাচক।
 

পাঠকের মন্তব্য Login Registration