লুকিয়ে লেখা আত্মজীবনী এনে দিল সাহিত্য পুরস্কার

প্রতিনিধি | শ্রদ্ধাঞ্জলি

শনিবার ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯|১৫:৫৩:১৮ মি.



সৃজনবাংলা ডেস্ক: মানুষ দ্বীপের ডিটেনশন সেন্টারে বসে মোবাইলে লেখা নিজের প্রথম বইয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ সাহিত্য পুরস্কার জিতেছেন এক শরণার্থী। ইরানের বেহরুজ বুচানি গত ছয় বছর ধরে পাপুয়া নিউ গিনিতে অস্ট্রেলিয়ার ডিটেনশন সেন্টারে বসবাস করছেন। শরণার্থী জীবনের দুঃখ ও একাকিত্ব নিয়ে তার লেখা আত্মজীবনীমূলক বই ‘নো ফ্রেন্ডস বাট দ্য মাউন্টেইস’ বৃহস্পতিবার ‘ভিক্টোরিয়ান প্রাইজ’ সাহিত্য পুরস্কার জেতে; যার আর্থিক মূল্য এক লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার।
নৌকায় করে সমুদ্র পথে অস্ট্রেলিয়া প্রবেশের চেষ্টা করা বুচানি ধরা পড়ার পর থেকে মানুষ দ্বীপে শরণার্থী ক্যাম্পে আছেন। ওই ক্যাম্পে এক হাজারের বেশি শরণার্থী বসবাস করে। পুরস্কার জয়ের খবরের পর টেক্সট ম্যাসেজে বুচানি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার চারপাশের নির্দোষ মানুষদের ভোগান্তি শেষ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এ অর্জন উদযাপন করতে চাই না। খবর বিডিনিউজের।
অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন নীতি অত্যন্ত কঠোর। দেশটির সরকার শরণার্থীদের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে না দিয়ে পাপুয়া নিউ গিনির তিনটি এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ নাউরুর ডিটেনশন সেন্টারে রাখে। অভিবাসনের আবেদন এবং সেগুলো যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্যে ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে বছরের পর বছর শরণার্থীদের এক রকম বন্দি জীবন কাটাতে হয়। কঠোর অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচক বুচানি মোবাইলে নিজ ভাষা ফার্সিতে বইয়ের এক একটি অধ্যায় লিখে তা ‘হোয়াটসঅ্যাপ’র মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় একজন অনুবাদকের কাছে পাঠাতেন।
ওই সময় তার সবচেয়ে বড় আতঙ্ক ছিল, ক্যাম্পের নিরাপত্তারক্ষীরা কখন তার ফোনটি কেড়ে নেয়। ‘আমি সব সময় আতঙ্কে থাকতাম, যদি তারা আমার কক্ষে হানা দিয়ে আমার সব সম্পদ কেড়ে নেয়।’ বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠান আয়োজনে অস্ট্রেলিয়া এমন এক সাহিত্যিককে পুরস্কৃত করলেন যাকে তারা সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। ‘এটা অস্ট্রেলিয়ার সরকারের জন্য দারুণ লজ্জার। তাদের নীতির কারণেই আজ আমার এ দুর্দশা, বলেন বুচানি।

পাঠকের মন্তব্য Login Registration