সৌম্যর এমন অভিজ্ঞতা আগে হয়নি

প্রতিনিধি | আরো

রবিবার ১৯ আগস্ট ২০১৮|১৯:৪১:২১ মি.



সৃজনবাংলা ডেস্ক: আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ ‘এ’। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সৌম্য সরকার। প্রথমবারের অধিনায়কত্ব করেই সফল, সৌম্যর অন্য রকম অভিজ্ঞতাই হলো এবারের আয়ারল্যান্ড সফরে।

সৌম্য সরকার মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছেন। ডাবলিনের এ সকালটা তাঁর ভীষণ ভালো লাগার কথা। এক মাস ধরে সফরের ওপর আছেন। ঢাকা থেকে যেতে হয়েছে সেন্ট কিটস-ফ্লোরিডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। ফ্লোরিডা থেকে বাংলাদেশ দলে দেশে চলে এলেও সৌম্যকে ধরতে হয়েছে আয়ারল্যান্ডের বিমান। সেখানে ‘এ’ দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে আজ ফিরছেন দেশে।

দেশে ফিরছেন, সে আনন্দ তো আছেই। সৌম্যর বেশি ভালো লাগছে আইরিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা জিতেছেন ২-১ ব্যবধানে। এই সিরিজের আলাদা একটা তাৎপর্য আছে তাঁর কাছে। প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিয়েছেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। দল সিরিজ জিতেছে, ৩ ম্যাচে ৩৮.৩৩ গড়ে ১১৫ রান করে হয়েছেন সিরিজ-সেরা। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পেরে সৌম্যর তৃপ্ত কণ্ঠ খুঁজে পাওয়া গেল ফোনের এ প্রান্তে, ‘আগে শুধু ব্যাটিং নিয়েই চিন্তা করতাম। এবার একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে হয়েছে। দলের চিন্তা সব সময়ই করতে হয়। প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্ব করেছি, একটু বেশিই ভাবতে হয়েছে দলকে নিয়ে। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা ভালো ছিল।’Eprothomalo

ডাবলিনে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে ১৫৩ রানের লক্ষ্য দেয় আয়ারল্যান্ড ‘এ’। সৌম্যর ৪১ বলে ৫৭ রান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ‘এ’ দলকে ৪ উইকেটের জয় এনে দিতে। পরেরটিতে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আইরিশরা জেতে ৫১ রানে। কাল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৮৪ রানের লক্ষ্য দেয় আয়ারল্যান্ড ‘এ’। মোহাম্মদ মিঠুন-সৌম্যর ওপেনিং জুটিতে তোলা ১১৭ রান জয়ের পথ দেখিয়ে দেয়। সৌম্য করেন ৩০ বলে ৪৭, মিঠুন ৩৯ বলে ৮০। বাংলাদেশ ‘এ’ ম্যাচ জেতে ৬ উইকেটে। ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নেই, থাকলে সেটি নিশ্চিত মিঠুনই পেতেন। তবে সিরিজ-সেরার পুরস্কার ছিল। দুটি টি-টোয়েন্টিতে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে সিরিজ-সেরা হয়েছেন সৌম্য।

দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আনন্দ যেমন আছে। অধিনায়কত্বের চাপ কাকে বলে সৌম্য সেটাও অনুভব করেছেন ভালোভাবে, ‘সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পেরে ভালো লেগেছে। তবে একটু চাপ অনুভব হয়েছে। সেই চাপে ফিল্ডিংও অনেক সময় খারাপ হয়েছে। টুকটাক হাতছাড়া হয়েছে! প্রথমবার তো, একটু বেশি চিন্তা করেছি। ফিল্ডিং সাজানো, কাকে-কখন বল দেব, কাকে দেব না, এসব নিয়ে অনেক ভেবেছি। একটা জিনিস বেশি মনে হয়েছে, অধিনায়কের কথা অনেক বড় কিছু। মাঠে নামার আগে বা মাঠের পরিকল্পনায় এটা-সেটায় অনেক কথা বলতে হয়েছে। আরেকটি জিনিস বুঝেছি, অধিনায়ক ভালো খেললে উজ্জীবিত হয় দলের সবাই।’

ছন্দ ফিরে পেয়েছেন, দল সাফল্য পেয়েছে—এ সুখবরেও সৌম্যর একটু অতৃপ্তি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাওয়ায় আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে এক দিনের ম্যাচগুলো খেলা হয়নি। উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে পারেননি, করেছেন তিন ম্যাচে ১৯ রান। সামনে যেহেতু এশিয়া কাপ হবে ওয়ানডে সংস্করণে, সৌম্যর মনে হয়েছে আইরিশদের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলতে পারলে সুযোগ হতো আরও ভালোভাবে ঝালিয়ে নেওয়ার, ‘ওয়ানডে সিরিজটা খেলতে পারলে ভালো হতো। টি-টোয়েন্টি তো অনেক খেলছি। এই সংস্করণে সব সময়ই গিয়ার ওপরে থাকে। ওয়ানডেতে একটু সময় নিতে হয়, ভাবার সময় থাকে। সামনে এশিয়া কাপ। ওয়ানডে সিরিজটা খেলতে পারলে ভালো হতো।’

আইরিশদের বিপক্ষে এক দিনের ম্যাচ খেলতে পারেননি, তবে টি-টোয়েন্টি থেকে পেয়েছেন আত্মবিশ্বাস। আয়ারল্যান্ড সফরে সৌম্যর প্রাপ্তি এটাই।

পাঠকের মন্তব্য Login Registration