জীবন খাতা-১৫

প্রতিনিধি | সাহিত্য

শনিবার ৪ আগস্ট ২০১৮|১০:২৭:২৯ মি.



এনাম আহমেদ
যাদুর পড়াশোনার পরিধি যত বাড়ছে, তার মধ্যে চঞ্চলতাও তত বাড়ছে। তার সমবয়সীরা খেলার আসরে টের পাচ্ছে তার পড়াশোনার অগ্রগতি। কেননা, বাবা তাকে দৈনন্দিন জীবন-যাপনের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার ছিটেফোঁটা দেবার চেষ্টা করছেন। শিশু যাদুও তার মর্যাদা রাখছে প্রতিদিন। তাই বলে তার দিনের দুষ্টুমিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে না কিছুতেই।যাদু  ছুটছে মাঠে-প্রান্তের নিজের খুশি মত। 

বর্ণমালার সংখ্যা যত বাড়ছে যাদু জ্ঞানের ভূবন তত বাড়ছে। যাদু কারণে- অকারণে উচ্চারণ করেই যাচ্ছে তার অধীত বিদ্যা। আজকে বই-পত্র নিয়ে সে আগেই প্রস্তুত। বাবা এলেই নতুন শব্দ শিখবে।তাতে তার উৎসাহ অনেক।  অবশ্য বাবা বলেছেন, তোমাকে যতক্ষণ নতুন বর্ণমালা না শেখাচ্ছি, ততক্ষণ পুরনো গুলোই পড়তে থাকবে। তাহলে ওগুলো ভুলে যাবে না।

অবশেষে বাবা এলেন। যাদু তার বইটি এগিয়ে দিতেই বাবা বললেন,
-গ তে-গরু, গরুর দুধে ছানা হয়।
ঘ তে-ঘোড়া, ঘোড়া ছুটছে মাঠময়।
-আব্বা ছানা খেতে খুব মিষ্টি, তাই না। আব্বা আমি এখন ছানা খেতে চাই। 
-ঠিক আছে খাবে। এখন নয়, কাল অফিস থেকে আসার সময় নিয়ে আসব।
-আব্বা মা সেদিন বলেছিলেন, ছানা দিয়ে নাকি রসগোল্লা হয়।
-হ্যাঁ, মা ঠিকই বলেছেন। তুমি তো ময়রার দোকানে যাওনি, তাই ওদের মিষ্টি বানানো দেখনি।
-আব্বা, ময়রারা কী শুধুই মিষ্টিই বানায়। 
-না, ছানা, দই, ঘি ও বানায়।
-ও তাহলে তো কাজটা দেখতেই হয়।আমাকে নিয়ে যাবেন কিন্তু।
-ঠিক আছে কোন এক রোববারে নিয়ে যাব।
-আব্বা, ছবিতে ঘোড়াটা ছুটছে কেন? 
-ছোটাইতো ঘোড়ার বড় কাজ।
-তাই নাকি।আমি একটা ছবিতে দেখেছি অনেক লোক ঘোড়ায় চড়ে যাচ্ছে। ওরা কোথায় যাচ্ছিল আব্বা? 
-ওরা ছিল সৈন্যদল। ওরা যুদ্ধে যাচ্ছিল। 
-যুদ্ধ কেন? আব্বা, মা না বলেছে যুদ্ধ নাকি ভালো না। কেন ভালো না আব্বা? 
-যুদ্ধে দেশের অনেক ক্ষতি হয়, অনেক মানুষ-জন মারা যায়। ঘর-বাড়ি পুড়ে যায়, মানুষ ভিটে ছাড়া হয়।
-তাহলে আব্বা আমি কখনো যুদ্ধে যাব না।
-ঠিক আছে, যেও না। এখন পড়া শেষ করো।
যাদু পুরোদমে তার পড়ার কাজ শুরু করে দিলো। গ তে-গরু, গরুর দুধে ছানা হয়...

পাঠকের মন্তব্য Login Registration