জীবন খাতা-১৩

প্রতিনিধি | সাহিত্য

বুধবার ১ আগস্ট ২০১৮|১৯:২৮:৩৫ মি.



এনাম আহমেদ
বইয়ের পাতা যেমন উল্টে যায় কখনও বাতাসে আবার কখনও বা পাঠকের প্রয়োজনে। যাদুর বইয়ের পাতাও উল্টে যায় শেখার প্রয়োজনে। যাদু ইতোমধ্যে স্বরবর্ণ শিখে ফেলেছে। সে কিছুটা শিক্ষিত হয়ে উঠেছে। তাই সুযোগ পেলেই আশপাশের মানুষজনকে শেখা বিদ্যার কিছুটা শুনিয়ে দেয়। শুনে সবাই যাদুর বিদ্যার বহর সম্পর্কে প্রশংসা করে।যাদুও বেশ খুশি হয়।
আজ যাদুর মনে ফুরফুরে ভাব। আব্বা বলছেনে, আজ নতুন বর্ণমালা শুরু করবেন। ওগুলো নাকি ব্যঞ্জন বর্ণ। সন্ধ্যা হলে বাপ-বেটা ছাত্র-শিক্ষকের ভূমিকায় নামে। বাবা বলতে শুরু করলেন,
ক তে-কদম, কদম ফোটে বর্ষাকালে।
-আব্বা এখন কি কাল? 
-গ্রীষ্মকাল।এ সময় কী গরম বেশি লাগে?
-তা লাগে। 
-তাইতো এটা পঁচা কাল। 
-না বাবা, এ সময় সব মজার মজার ফল পাওয়া যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি গ্রীষ্ম কালের ফল। এজন্য জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধু মাস বলে। তুমি না কি কি ফল খেতে পছন্দ করো? 
-আম। 
-আর কি পছন্দ করো? 
-অবশ্যই লিচু।
-আচ্ছা এবার বলো, খ তে-খই, খই খেতে দাও রোজ সকালে।
-খই কী আব্বা? 
-ধান ভেজে খই তৈরি করা হয়। তুমি গতবার না আম-দুধ খই দিয়ে খুব করে খেলে, মনে নেই বাবা। 
-আমি না তখন অনেক ছোট। ছোটবলোর কথা মনে নেই আব্বা। 
-ঠিক আছে, তুমি চাইলে এবারও আবার ফলারের আয়োজন হবে।
-ফলার! এটা ও নতুন শুনলাম আব্বা।
-ও তাই। ফলার হচ্ছে কয়েক ধরনের ফল দিয়ে নাস্তার ব্যবস্থা। বাবা বলতে লাগলেন, এবারও জ্যৈষ্ঠ মাসে আমাদের এই পাশের বিলে আম, কাঁঠাল, লিচু, কাঁচা তাল বোঝাই নৌকা আসবে। তখন তোমাকে নিয়ে ঝাঁকা বোঝাই আম কিনে আনব। আর তুমি তাল শাঁস পছন্দ করো, তাল শাঁসও নিয়ে আসব। যাদু তখনই আনন্দে লাফাতে শুরু করে দিল।আর আবদার জুড়ে দিল। 
-আব্বা এবার কিন্তু নানা বাড়ি যাব। যেতেইে হবে। ঐ যে কবিতায় আছে না, আম কুড়াতে সুখ-আমি এবার আম কুড়াব কিন্তু। 
-ঠিক আছে, তাই হবে। এখন একটু মন দিয়ে পড়তো বাবা।
যাদু মনযোগ দিয়ে পড়তে থাকে।ক তে-কদম, কদম ফোটে বর্ষাকালে...

পাঠকের মন্তব্য Login Registration